স্টাফ রিপোর্টারঃ জগন্নাথপুর-সিলেট সড়কের (জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর-সিলেট) সড়ক সংস্কার কাজ শেষ হতে না হতেই বিভিন্ন স্থানে ভাংগন দেখা দিয়েছে। সড়কের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের উপকরণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার জগন্নাথপুর উপজেলা পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে অনিয়মের ঘটনা লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালে সড়কের জগন্নাথপুর উপজেলা অংশের ১৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য ২৫ কোটি টাকার দরপত্র আহবান করা হলে মাদারীপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হামীম সালেহ (জেভি) অংশ নেয়। এসময় দ্রুত সড়কের কাজ বাস্তবায়ন করতে ২০ শতাংশ অতিরিক্ত দরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। সে অনুযায়ী ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সড়কে সংস্কার কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ৩১ মার্চ কাজ শেষ করার কথা ছিল।
জগন্নাথপুর পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি রব্বানী মিয়া বলেন, জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর -সিলেট সড়কের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে।এত বড় বরাদ্দ পাওয়ার পরও কাটা পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া দিয়ে নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। সড়ক সংস্কার কাজে নিম্মমানের উপকরণ সামগ্রী ব্যবহার করায় কাজ শেষ হতে না হতেই নতুন সড়ক নির্মাণ কাজ ভেংগে ধসে পড়ছে । সড়কের কাজ বাস্তবায়নকারী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে আঁতাত করে সরকারি অর্থ লুটপাট হচ্ছে। এতে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তদন্ত পূর্বক এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমরা লিখিত অভিযোগ করেছি।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলা অংশে ১৩ কিলোমিটার সড়কের আটঘর এলাকার কার্পেটিং সড়ক ধসে পড়েছে। এছাড়াও ভবেরবাজার, রতিয়ারপাড়া, বড়কাপন, হবিবপুর এলাকায় সড়কের কাজ শেষ হতে না হতেই ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের কাজ শেষ হওয়ার আগে সংস্কারকৃত সড়কটি ভাঙ্গনের বিষয়টি আমাদেরকে খুবই হতাশ করেছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, বিভাগীয় শহর সিলেট ও রাজধানী ঢাকাতে যাতায়াত করতে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের রশিদপুর হয়ে জগন্নাথপুর ও বিশ্বনাথ উপজেলাবাসীর একমাত্র সড়ক এটি। সড়কের জগন্নাথপুর উপজেলা অংশে ১৩ কিলোমিটার ও বিশ্বনাথ উপজেলা অংশের ১২কিলোমিটার যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় দুই উপজেলার লোকজন দির্ঘ দিন সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন।
স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, সড়কে নতুন মাটি ধ্বসে যাওয়ায ফাটল ধরেছে। দ্রুত সময়ের মধ্য মেরামত করা হবে। তিনি বলেন, এ সড়কের জগন্নাথপুর উপজেলা অংশের কাজ ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। প্রাক্কলন অনুযায়ী সড়কের কাজ হচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছি।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, সড়ক সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ প্রতিনিয়ত লোকজন আমাদেরকে জানাচ্ছেন। ইটের খোয়া দিয়ে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। কার্পেটিং দায়সারাভাবে করা হচ্ছে। কাজ যাতে টেকসই হয় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দের দায়িত্ব শীল হওয়া উচিৎ ।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply